আজকের এই কর্পোরেট দুনিয়ায় এইচআর অফিসার কেবল কাগজপত্রের ফাইল ও নীতিমালা নিয়ন্ত্রণকারী কেউ নন। তিনি কর্মীদের মনোবল ও পারফরম্যান্স গঠনেও মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। এই দায়িত্ব পালন করতে হলে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা থাকা অপরিহার্য। কারণ, একজন প্রফেশনাল HR অফিসারের নেতৃত্ব শুধু কাজের পরিবেশ উন্নত করে না, বরং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনেও সহায়ক হয়।
এই ব্লগে আমরা জানবো, কেনো একজন এইচআর অফিসারের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী থাকা উচিত, কীভাবে তিনি ক্ষমতা ও নেতৃত্বের ভারসাম্য বজায় রাখেন, এবং কর্মীরা তাদেরকে কীভাবে দেখেন? যারা এইচআর পেশার যোগ্যতা সম্পর্কে ভাবছেন এবং একটি ভালো এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার দিয়ে টিম পরিচালনা করতে চান, তাদের জন্য লেখাটি একটি গাইডলাইন হতে পারে।
ব্লগে যা থাকছে-
এইচআর অফিসার পেশাটি কেমন এবং কাদের জন্য ভালো?
এইচআর (হিউম্যান রিসোর্সেস) পেশাটি মূলত মানুষ এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির কাজ করে! যারা মানুষের মনস্তত্ত্ব, আচরণ, দলে কাজ করার দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানে পারদর্শী, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ ক্যারিয়ার/পেশা। একজন প্রফেশনাল HR অফিসার প্রতিনিয়ত নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, কর্মী মূল্যায়ন, কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট, লিগ্যাল বিষয়াদি ও প্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক মানোন্নয়নে কাজ করেন।
এইচআর পেশা তাদের জন্য যাদের মধ্যে থাকে-
- কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতা
- সমস্যা সমাধানের মনোভাব
- মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও বোঝার ক্ষমতা
- নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা
- তথ্য গোপন রাখার সততা
এই পেশা তাদের জন্যও ভালো, যারা ভবিষ্যতে টিম পরিচালনার উচ্চতর পদে যেতে চান। যেমন- যেকোন টিমের টিম লিডার, হেড অব এইচআর, চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার (CHRO) ইত্যাদি।
এইচআর টিমের সকলকে অন্য কর্মীরা কেমন চোখে দেখেন?
কর্মীরা সাধারণত এইচআর টিমকে দুভাবে দেখেন! একদল মনে করেন এইচআর শুধু ম্যানেজমেন্টের পক্ষে কাজ করে, অন্যদল এইচআরকে তাদের সমস্যার সমাধানকারী হিসেবে বিবেচনা করেন। কিন্তু একজন দক্ষ এইচআর অফিসার এই বিভেদ দূর করে সবার আস্থা অর্জন করতে পারেন। কর্মীদের চোখে তারা হয়ে ওঠেন বিচারক, আবার অনেক সময় হয়ে ওঠেন অভিভাবকের মতো। খুব বেশি ব্যতিক্রম না হলে কর্মীরা তাদের এইভাবে দেখে থাকেন-
১. বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গোপনীয়তার রক্ষক: এইচআর অফিসারদের প্রধান দায়িত্বগুলোর একটি হলো ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা। কর্মীরা চান তাদের সমস্যাগুলো একজন বিশ্বাসযোগ্য অফিসারের কাছে তুলে ধরতে।
২. সমাধানদাতা: কর্মক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হলে, যেমন কলিগদের মধ্যে বিরোধ, বেতন সংক্রান্ত ইস্যু, অথবা ওয়ার্কলাইফ ব্যালেন্সের সমস্যা। এইচআর অফিসারের কাছেই প্রথমে যান অধিকাংশ কর্মী।
৩. নিরপেক্ষ প্রশাসক: কর্মীরা চান, এইচআর টিম হোক পক্ষপাতহীন। এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা সহ একজন অফিসারই পারে নিরপেক্ষভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে।
৪. প্রশিক্ষক ও গাইড: কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে ও মোটিভেট করতে প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও ফিডব্যাক সেশনে এইচআরের ভূমিকা অপরিহার্য। এ কারণে তারা অনেক সময় গাইড হিসেবেও বিবেচিত হন।
এইসব দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয় মূলত একজন এইচআরের ব্যবহারে এবং তার নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা কতটা শক্তিশালী, তার ওপর।
আপনাকে নেতৃত্ব ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য জানতে হবে!
অনেকে মনে করেন নেতৃত্ব আর ক্ষমতা একই জিনিস, কিন্তু তা ঠিক নয়। আবার অনেকে মনে করেন, নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা মানেই ‘অধিকার ও কমান্ড প্রয়োগ করা’। কিন্তু বাস্তবে নেতৃত্ব ও ক্ষমতা দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। ক্ষমতা হলো অফিসিয়াল অথরিটি, যা পদ বা অবস্থানের কারণে পাওয়া যায়। অন্যদিকে, নেতৃত্ব হলো মানুষ যা বা যাকে স্বেচ্ছায় অনুসরণ করে বা করার ইচ্ছা পোষণ করে।
এইচআর অফিসারের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা থাকা জরুরি, কারণ:
- তিনি শুধু নিয়ম কানুন চাপিয়ে দেন না, বরং কর্মীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
- তিনি কোম্পানির লক্ষ্য ও কর্মীদের চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য রাখেন।
- তিনি সংঘাত নিরসন করে টিমওয়ার্ক বাড়াতে সাহায্য করেন।
সহজ কথায় ক্ষমতা হলো- পদ, নিয়ম-কানুন আর নেতৃত্ব হলো- আস্থা, সম্মান ও ব্যক্তিত্ব। ক্ষমতা হলো- নির্দেশ দেওয়া, নিয়ন্ত্রণ করা আর নেতৃত্ব হলো- অনুপ্রেরণা দেওয়া, সমন্বয় করা। ক্ষমতা হলো- বাহ্যিক ও কর্তৃত্বমুখী আর নেতৃত্ব হলো- অভ্যন্তরীণ ও সম্পর্কনির্ভর। ক্ষমতা হলো- নিয়ম মানানো আর নেতৃত্ব হলো- টিমকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করা। এবার নিশ্চয়ই পরিষ্কার হয়েছে! একজন দক্ষ HR অফিসার তার ক্ষমতা নয়, বরং নেতৃত্ব দিয়েই কর্মীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করেন। তিনি বোঝেন, কর্মীদের সম্মান ও উৎসাহের মাধ্যমেই কর্মদক্ষতা বাড়ে।
HR অফিসারের কেনো নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা থাকতেই হবে?
একজন এইচআর অফিসার যদি নেতৃত্বগুণে সমৃদ্ধ হন, তাহলে পুরো প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্কৃতি ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন হয়। নিচে এর কিছু কারণ দেওয়া হলো-
১. টিম পরিচালনায় দক্ষতা দেখাতে হয়
এইচআর অফিসারকে বিভিন্ন কর্মচারী, বিভাগের প্রধান ও ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কাজ করতে হয়। এখানে নেতৃত্ব ছাড়া সঠিক সিদ্ধান্ত ও সমন্বয় করা সম্ভব নয়।
২. সংঘর্ষ বা দ্বন্দ্ব সমাধানে নেতৃত্ব জরুরি
কর্মীদের মধ্যে বিবাদ হলে একজন প্রফেশনাল HR অফিসার কনফ্লিক্ট রেজল্যুশনের দায়িত্বে থাকেন। এ সময় কার্যকর নেতৃত্বের গুণ থাকলে সে সমস্যাগুলো সহজেই মীমাংসা করা যায়।
৩. ইতিবাচক নেতৃত্ব কাজের পরিবেশ তৈরি করে
একজন ভালো নেতা কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক নেতৃত্ব ছড়িয়ে দিতে পারেন। এটি শুধু মনোভাব উন্নয়নই করে না, বরং কর্মীদের ধরে রাখা বা রিটেনশন রেটও বাড়ায়।
৪. প্রতিষ্ঠানিক পরিবর্তনে নেতৃত্ব অত্যন্ত প্রয়োজনীয়
নতুন নিয়ম, সফটওয়্যার (যেমন এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার) বা সংস্কৃতিগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কর্মীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে একজন এইচআরের নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৫. কর্মী অনুপ্রেরণায় নেতৃত্বের প্রয়োজন
একজন প্রফেশনাল HR অফিসার যদি নিজেই উদ্যমী ও মোটিভেটেড থাকেন, তাহলে তার নেতৃত্ব কর্মীদের মাঝেও অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে।
নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি!
আজকের দুনিয়ায় কেবল নিজস্ব গুণ দিয়ে নয়, প্রযুক্তি ব্যবহার করেও নেতৃত্বের দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, হাজিরা বা অনুরূপ এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার দিয়ে কর্মীদের উপস্থিতি, ছুটি, পারফরম্যান্স এবং রিপোর্ট মনিটর করা যায়। এর মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া ও সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করা যায়। প্রযুক্তি একজন এইচআরের চোখকে আরও তীক্ষ্ণ করে তোলে এবং সিদ্ধান্তকে শক্তিশালী ও তথ্যভিত্তিক (ডেটা ড্রিভেন) করে তোলে।
একজন HR অফিসারের বেলায় শুধুমাত্র ক্ষমতা থাকলেই হয় না, প্রয়োজন নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা। কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা, সংকটকালীন সিদ্ধান্ত নেয়া, টিমকে অনুপ্রাণিত রাখা এবং প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতিষ্ঠানকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার মতো কাজ করতে গেলে একজন প্রফেশনাল HR অফিসার হিসেবে নেতৃত্ব গুণ অপরিহার্য। নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা থাকলে এইচআর অফিসার শুধু একটি টিমকেই নয়, পুরো প্রতিষ্ঠানকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারেন!
আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী সমাধান- হাজিরা
হাজিরা দেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপগুলোর একটি। একটি অ্যাপ থেকেই আপনি পেতে পারেন কর্মী ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সাপোর্ট। যেমন-
- দৈনিক হাজিরা
- কর্মী তথ্যভাণ্ডার
- কাজের শিফট প্লানিং
- রিপোর্ট
- পে-রোল ম্যানেজমেন্ট
- ডিজিটাল চুক্তিপত্র
- ডকুমেন্ট ভল্ট
- কাস্টম সেটিংস
- ফ্রি কাস্টমার সাপোর্ট
কেনো সাশ্রয়ী অ্যাপ বলছি সেটা জানতে দেখুন- হাজিরা’র বিভিন্ন প্যাকেজ ও মূল্য
সহজ তিনটি ধাপে হাজিরা’তে যাত্রা শুরু করুন!
১ম ধাপ- হাজিরা’তে রেজিস্ট্রেশন বা সাইন আপ করুন:
প্রথমেই কোম্পানির মালিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করে হাজিরা’য় আপনার জার্নি শুরু করুন। রেজিস্ট্রেশনের পরেই আপনার ইনবক্সে একটি ভেরিফিকেশন মেইল যাবে, এটি দিয়ে আপনার ই-মেইলটি ভেরিফাই করতে হবে।
(ভেরিফিকেশন মেইলটি আপনার ইনবক্সে না পাওয়া গেলে অনুগ্রহ করে স্প্যাম ফোল্ডারে চেক করুন।)
২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন:
ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে লগইন করুন। এবার আপনার কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে হাজিরা’য় আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন।
৩য় ধাপ- হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন:
এরপর আপনি হাজিরা’র ড্যাশবোর্ডটি দেখতে পাবেন। হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন সহজে এবং সাশ্রয়ী দামে! হাজিরা’র ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, দুটোই আছে।
ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন: আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে হবে।
হাজিরা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন
মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ আপনার প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কাজগুলো পরিচালনা করা আরও সহজ করবে। এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট আরও সহজ করতে ডাউনলোড করুন হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ-
হাজিরা অ্যাপের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ডেমো ভিডিও দেখুন-
Demo of Hazira- Employee Management Application
৩০ দিনের ফ্রি ট্রায়াল!
হাজিরা’য় আপনি চাইলেই প্রথম ৩০ দিন ফ্রি ট্রায়াল শুরু করতে পারেন। তারপর প্রয়োজন মতো আপনার ব্যবসার জন্য প্যাকেজ নিয়ে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করুন। তাহলে আর দেরি না করে চলে আসুন হাজিরা’য়!