এমপ্লয়ি টার্নওভার কমাতে এইচআর টিমের করণীয় কী?

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য দক্ষ ও অনুগত কর্মী গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কখন কখনও কর্মীরা একের পর এক চাকরি ছেড়ে চলে যায়, এটা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রবণতাকেই বলা হয় এমপ্লয়ি টার্নওভার (Employee Turnover), যা সরাসরি কোম্পানির উৎপাদনশীলতা, ইমেজ এবং আর্থিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করে। তাই এমপ্লয়ি টার্নওভার কমানোর উপায় জানা জরুরি। 

এমপ্লয়ি টার্নওভার রেট বেড়ে যাওয়া মানে কর্মী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং পুনঃনিয়োগের জন্য অতিরিক্ত খরচ বৃদ্ধি। এছাড়া, দীর্ঘদিন কাজ করা দক্ষ কর্মী চলে গেলে কোম্পানির দক্ষতাও কমে যায়। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে এইচআর অফিসারদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হয়। কর্মীদের জন্য একটি ভালো কর্মপরিবেশ তৈরি করা, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তাদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা, এসবই এমপ্লয়ি টার্নওভার কমানোর উপায়।

এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করবো, এমপ্লয়ি টার্নওভার কী, কীভাবে এটি পরিমাপ করা যায়, কেন এটি বেড়ে যায় এবং কীভাবে একটি দক্ষ এইচআর টিম এই হার কমাতে পারে।

এমপ্লয়ি টার্নওভার কী?

এমপ্লয়ি টার্নওভার (Employee Turnover) বলতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মীদের চাকরি ছেড়ে যাওয়ার হারকে বোঝায়। এটি দুই ধরনের হতে পারে-

  • ইচ্ছাকৃত টার্নওভার (Voluntary Turnover): কর্মীরা নিজের ইচ্ছায় চাকরি ছাড়ে। কিছুক্ষেত্রে অফিসের পরিবেশই এমন থাকে যে কর্মীরা চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।
  • অনিচ্ছাকৃত টার্নওভার (Involuntary Turnover): প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মীকে বরখাস্ত বা চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। 

কীভাবে এমপ্লয়ি টার্নওভার রেট ক্যালকুলেট করবেন?

এমপ্লয়ি টার্নওভার রেট নির্ণয়ের সূত্রটি সহজ। এটি বের করার সাধারণ ফর্মুলা:

টার্নওভার রেট = একটি নির্দিষ্ট সময়ে চাকরি ছেড়ে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা / সময়কালের গড় কর্মী সংখ্যা × ১০০

দুটি উদাহরণ দেখি-

ধরুন, 

বছরের শুরুতে কর্মী সংখ্যা = ১০০ জন

বছরের শেষে কর্মী সংখ্যা = ১২০ জন

বছরজুড়ে ৩০ জন কর্মী চাকরি ছেড়েছে

তাহলে,

গড় কর্মী সংখ্যা = (১০০ + ১২০) / ২ = ১১০

টার্নওভার রেট = (৩০ / ১১০) × ১০০ = ২৭.২৭%

আরেকটি সহজ উদাহরণ দেখি-

যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে ২০০ জন কর্মী থাকে এবং এক বছরে ৩০ জন চাকরি ছেড়ে যায়, তাহলে টার্নওভার রেট হবে-

৩০ / ২০০ × ১০০ = ১৫%

এই হার বিশ্লেষণ করে এইচআর টিম বুঝতে পারবে প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার সমস্যা কতটা গুরুতর। তারা এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য এমপ্লয়ি টার্নওভার কমানোর উপায় খুঁজে বের করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।

কী কারণে এমপ্লয়ি টার্নওভার রেট বেড়ে যায়?

  • অপ্রতুল পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা: কর্মীদের যদি তাদের কাজের তুলনায় কম পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে তারা নতুন চাকরির সন্ধান করতেই থাকবে।
  • অফিসের পরিবেশগত সমস্যা: অফিসে টক্সিক বা বিষাক্ত পরিবেশ, নেতিবাচক ব্যবস্থাপনা বা অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকলে কর্মীরা চাকরি ছাড়তে পারেন।
  • প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও উন্নতির অভাব: কর্মীরা যদি নিজেদের উন্নতির সুযোগ না পান, তাহলে তারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে চাইবে।
  • কাজের ভারসাম্যহীনতা: অতিরিক্ত ওভারটাইম বা অসম কাজের ভার থাকলে কর্মীরা দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং চাকরি পরিবর্তন করতে চায়।
  • স্বীকৃতি ও প্রশংসার অভাব: কর্মীদের কাজের স্বীকৃতি না দিলে তারা নিজেদের অবমূল্যায়িত মনে করতে পারে, যা চাকরি ছাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ।

এমপ্লয়ি টার্নওভার বেড়ে গেলে প্রতিষ্ঠানে কী কী প্রভাব পড়ে?

  • উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়: দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীরা চলে গেলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। কারণ, নতুন কর্মীদের নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে সময় লাগে।
  • অতিরিক্ত নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ ব্যয়: নতুন কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিতে প্রতিষ্ঠানকে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হয়। এই নতুন কর্মীদের তৈরি করার জন্য সময় ও সম্পদ ব্যয় করার পরে তাদের ধরে রাখাটাই প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো।
  • কর্মীদের মনোবল কমে যায়: টার্নওভার বাড়লে বিদ্যমান কর্মীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং তাদের কাজের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হয়।
  • ক্লায়েন্ট ও ব্র্যান্ড ইমেজের ক্ষতি: প্রতিষ্ঠান যদি নিয়মিত কর্মী হারায়, তাহলে গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানটির স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে পারে, যা ব্র্যান্ড ইমেজের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর।
  • প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়: বেশি কর্মী চলে গেলে প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে পারে না। যার ফলে আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা দুর্বল হয়ে পড়ে।

এমপ্লয়ি টার্নওভার ঠেকাতে এইচআর অফিসারের করণীয়

১. প্রতিযোগিতামূলক বেতন কাঠামো গঠন

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উচিত মার্কেট অনুযায়ী প্রতিযোগিতামূলক বেতন কাঠামো তৈরি করা। এটি কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখার অন্যতম কার্যকর উপায়।

২. অফিসের কর্মপরিবেশ উন্নত করা

একটি স্বাস্থ্যকর ও ইতিবাচক অফিস কর্মীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি করে। কর্মস্থলে খোলামেলা যোগাযোগ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৩. প্রশিক্ষণ ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট

প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট পরিকল্পনা রাখা। এটি কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।

৪. কাজের ভারসাম্য বজায় রাখা

কর্মীদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স নষ্ট হলে কর্মীরা চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। ওয়ার্কস্ট্রেস কমানোর জন্য ছুটির নীতিমালা ও কাউন্সেলিং প্রোগ্রাম চালু করা যেতে পারে।

৫. কর্মীদের স্বীকৃতি ও পুরস্কার দেয়ার কালচার

কর্মীদের অবদান যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে তারা আরও অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করবে। ইনসেনটিভ, বোনাস এবং কর্মীদের স্বীকৃতির জন্য প্রোগ্রাম চালু করলে কর্মী ধরে রাখা সহজ হয়।

৬. নিয়মিত ফিডব্যাক নেয়া ও যোগাযোগ

এইচআর টিমের উচিত কর্মীদের মতামত নিয়মিত নেওয়া এবং সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৭. কর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা

যত বেশি কর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা যাবে, ততো তারা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থাশীল থাকবে এবং কম চাকরি পরিবর্তনের চিন্তা করবে। নতুন কর্মীদের জন্য একটি ভালো অনবোর্ডিং প্রক্রিয়া চালু করলে তারা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে। এতে তাদের ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবে।

৮. প্রযুক্তির ব্যবহারে অভ্যস্ত করা

কর্মীদের কাজ সহজ করতে ও অফিস ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার করা উচিত। যেমন- একটি এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ এইচআর অফিসারদের জন্য অনেক সহায়ক হতে পারে।

মেনেজমেন্ট ও এইচআর টিমের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি!

একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের জন্য দক্ষ কর্মীদের ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু হাই এমপ্লয়ি টার্নওভার রেট কোম্পানির খরচ বাড়ায় এবং আরও বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এইচআর টিমের এমপ্লয়ি টার্নওভার কমানোর উপায় জানতে হবে এবং কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। 

কর্মপরিবেশ উন্নত করা, প্রতিযোগিতামূলক বেতন কাঠামো তৈরি করা, প্রশিক্ষণ ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টের সুযোগ দেওয়া, কাজের স্বীকৃতি ও পুরস্কার প্রদান, এসবই কার্যকর কৌশল। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করাও টার্নওভার কমাতে সহায়ক হতে পারে। একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখতে পারবে। এমপ্লয়ি টার্নওভার কমানোর উপায় জানার পাশাপাশি ভালো কর্মী ধরে রাখার উপায় জানতে পড়ুন-  কর্মক্ষেত্রে দক্ষ ও কর্মঠ কর্মী ধরে রাখার উপায় কী?

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী সমাধান- হাজিরা

হাজিরা দেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপগুলোর একটি। একটি অ্যাপ থেকেই আপনি পেতে পারেন কর্মী ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সাপোর্ট। যেমন-

  • দৈনিক হাজিরা
  • কর্মী তথ্যভাণ্ডার
  • কাজের শিফট প্লানিং
  • রিপোর্ট
  • পে-রোল ম্যানেজমেন্ট
  • ডিজিটাল চুক্তিপত্র
  • ডকুমেন্ট ভল্ট
  • কাস্টম সেটিংস
  • ফ্রি কাস্টমার সাপোর্ট

কেনো সাশ্রয়ী অ্যাপ বলছি সেটাও দেখে নেয়া যাক-  হাজিরা’র চারটি প্যাকেজ ও তাদের মূল্য

০১. বেসিক প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ০ থেকে ২০ জন

  • ৳১,৫০০/ মাসিক
  • ৳১৫,০০০/ বাৎসরিক

০২. স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ২১ থেকে ৫০ জন

  • ৳৩,০০০/ মাসিক
  • ৳৩০,০০০/ বাৎসরিক

০৩. প্রিমিয়াম প্যাকেজ-  

কোম্পানির সাইজ-  ৫০ থেকে ৯৯ জন

  • ৳৪,৫০০/ মাসিক
  • ৳৪৫,০০০/ বাৎসরিক

০৪. এন্টারপ্রাইজ প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ১০০+ জন

  • আলোচনা সাপেক্ষে
  • যোগাযোগ করুন- 
  • ফোন: 01967391554
  • ইমেইল: info@hazira.com

সহজ তিনটি ধাপে হাজিরা’তে যাত্রা শুরু করুন!

১ম ধাপ- হাজিরা’তে রেজিস্ট্রেশন বা সাইন আপ করুন: 

প্রথমেই কোম্পানির মালিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করে হাজিরা’য় আপনার জার্নি শুরু করুন। রেজিস্ট্রেশনের পরেই আপনার ইনবক্সে একটি ভেরিফিকেশন মেইল যাবে, এটি দিয়ে আপনার ই-মেইলটি ভেরিফাই করতে হবে। 

(ভেরিফিকেশন মেইলটি আপনার ইনবক্সে না পাওয়া গেলে অনুগ্রহ করে স্প্যাম ফোল্ডারে চেক করুন।)

২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন: 

ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে লগইন করুন। এবার আপনার কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে হাজিরা’য় আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন।

৩য় ধাপ- হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন: 

এরপর আপনি হাজিরা’র ড্যাশবোর্ডটি দেখতে পাবেন। হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন সহজে এবং সাশ্রয়ী দামে! হাজিরা’র ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, দুটোই আছে। 

ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন: আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে হবে।
হাজিরা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ আপনার প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কাজগুলো পরিচালনা করা আরও সহজ করবে। এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট আরও সহজ করতে ডাউনলোড করুন হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ- 

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ

আইওএস অ্যাপ 

হাজিরা অ্যাপের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ডেমো ভিডিও দেখুন-
Demo of Hazira- Employee Management Application
৩০ দিনের ফ্রি ট্রায়াল!

হাজিরা’য় আপনি চাইলেই প্রথম ৩০ দিন ফ্রি ট্রায়াল শুরু করতে পারেন। তারপর প্রয়োজন মতো আপনার ব্যবসার জন্য প্যাকেজ নিয়ে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করুন। তাহলে আর দেরি না করে চলে আসুন হাজিরা’য়!

এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার বাছাই করবেন কীভাবে?

যেকোন সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কর্মীদের কাজের শিডিউলিং বা সময়সূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আপনার প্রতিষ্ঠানে যদি একাধিক শিফটভিত্তিক কাজ হয়ে থাকে, তাহলে এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা অপরিহার্য। এটি আপনাকে সময় ও সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার (Employee Scheduling Software) নির্বাচন করা সহজ নয়!

এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কীভাবে আপনি সেরা এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ নির্বাচন করবেন। এসময় আপনাকে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে?

ব্লগে যা থাকছে-

এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার কী?

এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার মূলত একটি ডিজিটাল এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট টুল। এটি একটি প্রতিষ্ঠানকে তার কর্মীদের কাজের শিডিউল তৈরি করা, সেটা ট্র্যাক করা এবং ম্যানেজ করতে সাহায্য করে। এটি কাজের শিফট ব্যবস্থাপনা, ছুটির আবেদন ও অনুমোদন, কাজের সময় বা কর্মঘণ্টা ট্র্যাকিং এবং অন্যান্য এইচআর সম্পর্কিত কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদন করতে সাহায্য করে। এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি সময় বাঁচাতে পারেন, কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারেন এবং কর্মীদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে পারেন।

এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার এর প্রয়োজনীয়তা

একটি মানসম্মত এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার আপনার ব্যবসার সময় ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো পেতে পারেন:

  • সময় সাশ্রয়: ম্যানুয়াল শিডিউলিং যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি তাতে ভুলভ্রান্তি থাকার সম্ভাবনাও থাকে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি দ্রুত এবং নির্ভুল শিডিউল তৈরি করতে পারেন।
  • কর্মীদের সন্তুষ্টি: কর্মীরা তাদের শিফট, ছুটি এবং কর্মঘণ্টা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়, যা তাদের সন্তুষ্টির কারণ হতে পারে। কর্মীদের কাজের শিডিউল পরিবর্তন হলে তারা নোটিফিকেশন পেয়ে থাকেন।
  • এইচআর প্রক্রিয়া সহজীকরণ: এটি অন্যান্য এইচআর সংক্রান্ত কাজগুলো যেমন- পে-রোল, কর্মী মূল্যায়ন ইত্যাদি সহজ করে। কর্মচারীদের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতি ট্র্যাকিং করে, ফলে কর্মীদের হাজিরা ও ছুটির হিসাব করা সহজ হয়।
  • ডেটা বিশ্লেষণ: এই সফটওয়্যারটি কর্মীদের কর্মক্ষমতা এবং কাজের শিফট সম্পর্কিত ডেটা সংগ্রহ করে, যা ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশে এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার বাছাই করার সময় বিবেচ্য বিষয়সমূহ

এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার বাছাই করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত:

১. আপনার ব্যবসার চাহিদা নির্ধারণ করুন

প্রথমেই আপনার ব্যবসার চাহিদা বুঝতে হবে। যদি আপনার কোম্পানিতে শিফটভিত্তিক কাজ হয়, তাহলে আপনাকে এমন একটি Employee Scheduling App বাছাই করতে হবে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিফট প্ল্যানিং করতে পারে।

২. সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা সহজ কিনা?

আসলে, যে কোনো এইচআর সফটওয়্যার সহজেই ব্যবহারযোগ্য হওয়া উচিত। কর্মচারীরা যেন নিজেরাই তাদের শিডিউল দেখতে, এমনকি পরিবর্তন করতে পারে। এতে ম্যানেজমেন্টের ওপর চাপ অনেটাই কমবে। যদি সফটওয়্যারটি জটিল হয়, তাহলে এটি ব্যবহার করতে গিয়ে সময় এবং সম্পদ দুটোই ব্যয় হতে পারে। ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস এবং সহজ নেভিগেশন একটি ভালো সফটওয়্যার এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। 

৩. অ্যাপটি ক্লাউড-ভিত্তিক নাকি অফলাইন?

বর্তমানে ক্লাউড-ভিত্তিক এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ বেশি জনপ্রিয়, কারণ এটি যেকোনো স্থান থেকে ব্যবহার করা যায়। তবে, কিছু প্রতিষ্ঠান এখনও অফলাইন সফটওয়্যারকেই বেশি পছন্দ করেন। 

৪. অ্যাপের কাস্টমাইজেশন সুবিধা

একটি ভালো Employee Scheduling Software কাস্টমাইজ করা যায়। কারণ, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা আলাদা। আপনি যদি নিজস্ব নিয়ম মেনে শিডিউল সেট করতে চান, তাহলে কাস্টমাইজ করা যায় এমন সফটওয়্যার বেছে নেওয়া উচিত।

৫. সহজ ইন্টিগ্রেশন সুবিধা

আপনার প্রতিষ্ঠানে যদি আগে থেকেই Payroll Software বা Attendance System থাকে, তাহলে এমন এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার বেছে নিন যা সহজেই ইন্টিগ্রেট করা যায়। মানে, সফটওয়্যারটি অন্যান্য ব্যবসায়িক টুল যেমন- পে-রোল সফটওয়্যার, এইচআর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদির সাথে ইন্টিগ্রেটেড হওয়া উচিত। এটি আপনার ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে।

৬. মোবাইল অ্যাক্সেস থাকা জরুরি

বর্তমান সময়ে মোবাইল অ্যাক্সেস একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। একটি এমপ্লয়ি শিডিউলিং মোবাইল অ্যাপ থাকলে, কর্মীরা তাদের মোবাইল ডিভাইস থেকেই শিডিউল চেক করতে, ছুটির আবেদন করতে এবং অন্যান্য তথ্য পেতে পারেন।

৭. খরচ ও বাজেট বিবেচনায় রাখতে হবে

বাজারে অনেক ধরনের Employee Scheduling App রয়েছে, তবে সবগুলোর খরচ একরকম নয়। বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য কিছু অ্যাপ থাকলেও, পেইড সফটওয়্যার বেশি ফিচারসমৃদ্ধ হয়ে থাকে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বেছে নিতে হবে। বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার ‘হাজিরা’।

সফটওয়্যার এর মূল্য আপনার বাজেটের মধ্যে হওয়া উচিত। তবে, শুধু দামের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবেন না। সফটওয়্যারের বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধাগুলোও বিবেচনা করুন।

৮. কাস্টমার সাপোর্ট

সফটওয়্যার ব্যবহারের সময় যদি কোনো সমস্যা হয়, তখন দ্রুত সাপোর্ট পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এমন সফটওয়্যার নির্বাচন করুন, যার লোকাল কাস্টমার সাপোর্ট ব্যবস্থা রয়েছে।

বাংলাদেশে জনপ্রিয় কিছু এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার

বাংলাদেশে বেশ কিছু এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়, যা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই জনপ্রিয়। নিচে কিছু জনপ্রিয় সফটওয়্যার এর তালিকা দেওয়া হল:

হাজিরা (Hazira): বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য একটি সহজ ও সাশ্রয়ী এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ হাজিরা। এখানে আপনি কর্মীদের কাজের শিডিউলিং থেকে শুরু করে পেরোল সংক্রান্ত সকল সুবিধা পারেন। এই সফটওয়্যারটি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। আরও জানতে হলে পড়ৃন- বাংলাদেশি কোম্পানির জন্য সেরা এইচআর সফটওয়্যার

শিফটবোর্ড (Shiftboard): এটি একটি শক্তিশালী শিডিউলিং টুল যা শিফট ম্যানেজমেন্ট, টাইম ট্র্যাকিং এবং কমিউনিকেশন সুবিধা দিয়ে থাকে।

হোমবেস (Homebase): এই সফটওয়্যারটি ছোট এবং মাঝারি ব্যবসার জন্য উপযুক্ত। এটি শিডিউলিং, টাইম ট্র্যাকিং এবং পে-রোল ম্যানেজমেন্ট সুবিধা প্রদান করে।

জোহ ওয়ার্কফোর্স (Zoho Workforce): এটি একটি পূর্ণাঙ্গ এইচআর সফটওয়্যার যা শিডিউলিং, অ্যাটেন্ডেন্স এবং পে-রোল ম্যানেজমেন্ট সুবিধা প্রদান করে।

টিন্ডা (Tanda): এই সফটওয়্যারটি কর্মীদের শিডিউলিং, টাইম ট্র্যাকিং এবং পে-রোল ম্যানেজমেন্টের জন্য ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত এমপ্লয়ি শিডিউলিং সফটওয়্যার নির্বাচন করা সহজ নয়। তবে চাহিদা অনুযায়ী সফটওয়্যার বাছাই করলে এটি আপনার ব্যবসার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। সঠিক এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার বেছে নিয়ে আপনার কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করুন!

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী সমাধান- হাজিরা

হাজিরা দেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপগুলোর একটি। একটি অ্যাপ থেকেই আপনি পেতে পারেন কর্মী ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সাপোর্ট। যেমন-

  • দৈনিক হাজিরা
  • কর্মী তথ্যভাণ্ডার
  • কাজের শিফট প্লানিং
  • রিপোর্ট
  • পে-রোল ম্যানেজমেন্ট
  • ডিজিটাল চুক্তিপত্র
  • ডকুমেন্ট ভল্ট
  • কাস্টম সেটিংস
  • ফ্রি কাস্টমার সাপোর্ট

কেনো সাশ্রয়ী অ্যাপ বলছি সেটাও দেখে নেয়া যাক-  হাজিরা’র চারটি প্যাকেজ ও তাদের মূল্য

০১. বেসিক প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ০ থেকে ২০ জন

  • ৳১,৫০০/ মাসিক
  • ৳১৫,০০০/ বাৎসরিক

০২. স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ২১ থেকে ৫০ জন

  • ৳৩,০০০/ মাসিক
  • ৳৩০,০০০/ বাৎসরিক

০৩. প্রিমিয়াম প্যাকেজ-  

কোম্পানির সাইজ-  ৫০ থেকে ৯৯ জন

  • ৳৪,৫০০/ মাসিক
  • ৳৪৫,০০০/ বাৎসরিক

০৪. এন্টারপ্রাইজ প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ১০০+ জন

  • আলোচনা সাপেক্ষে
  • যোগাযোগ করুন- 
  • ফোন: 01967391554
  • ইমেইল: info@hazira.com

সহজ তিনটি ধাপে হাজিরা’তে যাত্রা শুরু করুন!

১ম ধাপ- হাজিরা’তে রেজিস্ট্রেশন বা সাইন আপ করুন: 

প্রথমেই কোম্পানির মালিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করে হাজিরা’য় আপনার জার্নি শুরু করুন। রেজিস্ট্রেশনের পরেই আপনার ইনবক্সে একটি ভেরিফিকেশন মেইল যাবে, এটি দিয়ে আপনার ই-মেইলটি ভেরিফাই করতে হবে। 

(ভেরিফিকেশন মেইলটি আপনার ইনবক্সে না পাওয়া গেলে অনুগ্রহ করে স্প্যাম ফোল্ডারে চেক করুন।)

২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন: 

ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে লগইন করুন। এবার আপনার কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে হাজিরা’য় আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন।

৩য় ধাপ- হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন: 

এরপর আপনি হাজিরা’র ড্যাশবোর্ডটি দেখতে পাবেন। হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন সহজে এবং সাশ্রয়ী দামে! হাজিরা’র ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, দুটোই আছে। 

ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন: আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে হবে।
হাজিরা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ আপনার প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কাজগুলো পরিচালনা করা আরও সহজ করবে। এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট আরও সহজ করতে ডাউনলোড করুন হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ- 

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ

আইওএস অ্যাপ 

হাজিরা অ্যাপের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ডেমো ভিডিও দেখুন-
Demo of Hazira- Employee Management Application
৩০ দিনের ফ্রি ট্রায়াল!

হাজিরা’য় আপনি চাইলেই প্রথম ৩০ দিন ফ্রি ট্রায়াল শুরু করতে পারেন। তারপর প্রয়োজন মতো আপনার ব্যবসার জন্য প্যাকেজ নিয়ে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করুন। তাহলে আর দেরি না করে চলে আসুন হাজিরা’য়!